ন্যায্য ব্যবহার হল একটি এমন আইনি তত্ত্ব যা আপনাকে বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে কপিরাইট মালিকের কাছ থেকে অনুমতি না নিয়েই কপিরাইট সুরক্ষিত কন্টেন্ট আবার ব্যবহার করতে দেয়।
ন্যায্য ব্যবহার সংক্রান্ত অটোমেটিক প্রয়োগ করার জন্য কোনও যাদুমন্ত্র নেই। আপনি কারও কপিরাইটযুক্ত কাজ ব্যবহার করলে, ন্যায্য ব্যবহার সংক্রান্ত নীতির অধীনে আপনার সুরক্ষিত থাকার কোনও গ্যারান্টি নেই।
ন্যায্য ব্যবহার - YouTube-এ কপিরাইট
ন্যায্য ব্যবহার সংক্রান্ত সাধারণ প্রশ্ন
কীভাবে ন্যায্য ব্যবহার সংক্রান্ত নীতি কাজ করে?১. এই ধরনের ব্যবহার বাণিজ্যিক প্রকৃতির কিনা বা অলাভজনক শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে কিনা তা সহ কন্টেন্ট ব্যবহারের উদ্দেশ্য ও প্রকৃতি
কোনও কন্টেন্ট যেভাবে ব্যবহার করা হয়েছে সেটি "রূপান্তরিত" কিনা আদালত সাধারণত সেদিকে ফোকাস করে। ফোকাসের বিষয় হল, এটি আসল কন্টেন্টে নতুন অভিব্যক্তি বা অর্থ যোগ করেছে নাকি এটি কেবল আসল কন্টেন্ট থেকে কপি করেছে। বাণিজ্যিক উদ্দেশে কোনও কন্টেন্ট ব্যবহার করা হলে তা ন্যায্য হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সম্ভাবনা কম, যদিও কোনও ভিডিও মনিটাইজ করা এবং এখনও ন্যায্য ব্যবহার সংক্রান্ত নীতির আওতায় আসা সম্ভব।
২. কপিরাইট কাজের ধরন
বিশুদ্ধরূপে কাল্পনিক কাজ থেকে কন্টেন্ট ব্যবহার করার চেয়ে প্রাথমিকভাবে তথ্যমূলক কাজ থেকে কন্টেন্ট ব্যবহার করা আরও বেশি ন্যায্য বলে বিবেচনা করা হয়।
৩. সামগ্রিকভাবে কপিরাইটযুক্ত কাজের সাথে সম্পর্কিত ব্যবহার করা অংশটির পরিমাণ ও উল্লেখযোগ্যতা
আসল কাজটি থেকে বড় অংশ নেওয়ার থেকে অল্প কন্টেন্ট নেওয়ার বিষয়টি ন্যায্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যাইহোক, এটি যদি কাজের "কেন্দ্রবিন্দু" হয়, তাহলে কিছু কিছু পরিস্থিতিতে খুব অল্প হলেও ন্যায্য ব্যবহার সংক্রান্ত নীতি লঙ্ঘন হতে পারে।
৪. কপিরাইটযুক্ত কাজের সম্ভাব্য বাজারের উপর অথবা কপিরাইটযুক্ত কাজের মূল্যের উপর এটির কন্টেন্ট ব্যবহার সংক্রান্ত প্রভাব
যেসব ব্যবহারের কারণে কপিরাইট মালিকের নিজের আসল কাজ থেকে লাভবান হওয়ার ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেগুলি ন্যায্য ব্যবহার হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সম্ভাবনা কম। অনুকরণ সংক্রান্ত ব্যাপারে এই বিষয়ের আওতায় আদালত কখনও কখনও ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
আপনি যদি কপিরাইট মালিকের অনুমতি না নিয়েই কপিরাইটযুক্ত কন্টেন্ট থাকা কোনও ভিডিও আপলোড করেন, তাহলে একটি Content ID সংক্রান্ত দাবি পেতে পারেন। এই দাবির কারণে আপনার ভিডিওটি মনিটাইজ করা যাবে না, এমনকি আপনি কেবল কয়েক সেকেন্ড ব্যবহার করলেও (যেমন, জনপ্রিয় গানের সংক্ষিপ্ত ব্যবহার করা) এটি প্রযোজ্য হবে।
Content ID-এর মতো বিভিন্ন অটোমেটেড সিস্টেম ন্যায্য ব্যবহার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না কারণ এটি একটি বিষয় ভিত্তিক ও স্বতন্ত্র কেস ভিত্তিক সিদ্ধান্ত যা কেবলমাত্র আদালতই নিতে পারে। আমরা যদিও ন্যায্য ব্যবহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না বা কপিরাইট সংক্রান্ত বিবাদের মধ্যস্থতা করতে পারি না, তবুও YouTube-এ কন্টেন্টের ন্যায্য ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনার ভিডিওটি ন্যায্য ব্যবহারের আওতায় পড়ে বলে আপনি মনে করলে, Content ID সংক্রান্ত বিবাদের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনার অবস্থান রক্ষা করতে পারবেন। এই সিদ্ধান্ত হাল্কাভাবে নেওয়া উচিত নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনাকে বিবাদের বিষয়টি নিয়ে আপিল ও DMCA সংক্রান্ত জবাবী বিজ্ঞপ্তির প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে।
আপনি এবং দাবিদার উভয়েই যদি বিবাদের অধীনে থাকা কোনও ভিডিও মনিটাইজেশনের চেষ্টা করেন, তাহলে বিবাদ মিটে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ভিডিওটি মনিটাইজ করা যাবে। তারপরে, আমরা উপার্জিত অর্থ উপযুক্ত পক্ষকে প্রদান করব।
বিবাদ সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার বাইরে দাবি মিটমাটের জন্য আপনি যেসব বিকল্প ব্যবহার করতে পারেন
Content ID সংক্রান্ত দাবি ওঠার মতো বিষয় প্রথমেই এড়ানো হল এটি ম্যানেজ করার সহজতম উপায়। খুব প্রয়োজনীয় না হলে, আপনার ভিডিওতে কপিরাইটযুক্ত কন্টেন্ট ব্যবহার করবেন না। আপনার ভিডিওতে কোনও চার্জ ছাড়াই মিউজিক ব্যবহারের জন্য YouTube অডিও লাইব্রেরি দেখুন। আপনি অন্য কোনও রয়্যালটি-ফ্রি বা লাইসেন্সিং সাইট থেকে মিউজিক ডাউলোড করতে চাইলে, সেটির শর্তাবলী মনোযোগ সহকারে পড়ে নিতে ভুলবেন না। এর মধ্যে কয়েকটি পরিষেবা YouTube-এ মিউজিক ব্যবহার বা মনিটাইজ করার অধিকার নাও দিতে পারে। ফলে, আপনি এখনও Content ID সংক্রান্ত কোনও দাবি পেতে পারেন।
আপনি যদি এমন মিউজিকের জন্য Content ID সংক্রান্ত কোনও দাবি পান যেটি আপনার ভিডিওতে খুব প্রয়োজনীয় নয়, তাহলে এটি সরিয়ে দেওয়া অথবা অডিও লাইব্রেরি থেকে কপিরাইট-সুরক্ষিত ট্র্যাক দিয়ে এটি পাল্টে ফেলার চেষ্টা করুন। আপনি যেকোনও দাবি করা কন্টেন্ট বাদ দিয়ে এডিট করা ভিডিওর সম্পূর্ণ নতুন ভার্সন নতুন URL-এ আপলোড করতে পারবেন।
আমার কন্টেন্ট কি ন্যায্য ব্যবহার সংক্রান্ত নীতি অনুযায়ী সুরক্ষিত থাকবে...
আমি যদি কপিরাইট মালিকের নাম উল্লেখ করি?ন্যায্য ব্যবহার সংক্রান্ত বিশ্লেষণে সাধারণত রূপান্তরকরণই মূলমন্ত্র। কোনও কপিরাইটযুক্ত কাজের মালিককে কৃতিত্ব দিলেও তার কন্টেন্টের কোনও অ-রূপান্তরযোগ্য কপি ব্যবহার করলে তা ন্যায্য ব্যবহার হিসেবে অটোমেটিক বিবেচিত হবে না। "সমস্ত অধিকার লেখকের হাতে ন্যাস্ত" এবং "আমি মালিক নয়"-এর মতো বাক্যাংশের অর্থ অটোমেটিক এই হয় না যে আপনি সেই কন্টেন্টের ন্যায্য ব্যবহার করছেন। এছাড়াও, এগুলির অর্থ এই নয় যে আপনি কপিরাইট মালিকের থেকে অনুমতি নিয়েছেন।
এটির ব্যবহার ন্যায্য কিনা তা আদালত আপনার ব্যবহারের উদ্দেশ্য যত্নসহকারে পর্যালোচনা করে নির্ধারণ করবে। যেমন, আপনার আপলোড "কেবলমাত্র বিনোদনের উদ্দেশ্যে" ঘোষণা করলে সেটি ন্যায্য ব্যবহারের সমীকরণ পরীক্ষার মাপকাঠি পূরণে সক্ষম হবে সেই সম্ভাবনা কম। একইভাবে, "অ-লাভজনক" উদ্দেশ্যে কন্টেন্ট ব্যবহার করলে তা ন্যায্য ব্যবহার বিশ্লেষণে বিশেষ সুবিধা পায়। তবে, এটি নিজে কোনও অটোমেটিক সুরক্ষা কবজ নয়।
আরও তথ্য
আপনি ন্যায্য ব্যবহার সম্পর্কে আরও জানতে চাইলে, অনলাইনে এই বিষয়ে অনেক রিসোর্স উপলভ্য। নিচে উল্লেখ করা সাইটগুলি শুধুমাত্র শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য এবং YouTube এগুলি এনডোর্স করে না:
- 'সেন্টার ফর মিডিয়া অ্যান্ড সোশ্যাল ইম্প্যাক্ট'-এর "অনলাইন ভিডিওর জন্য ন্যায্য ব্যবহার সংক্রান্ত পেশাদার পদ্ধতির আচরণবিধি"
- 'ডিজিটাল মিডিয়া ল প্রোজেক্ট'-এর দেওয়া চারটি ফ্যাক্টরের বিশদ ব্যাখ্যা
- 'মার্কিন কপিরাইট অফিস'-এর ন্যায্য ব্যবহার সংক্রান্ত ইনডেক্স